পেশাগত বিপত্তি(Occupational Hazzards)
যেকোন বাস্তব অবস্থা বা ঘটনা যার কারনে কোনো ব্যক্তির বা ধনসম্পদের বা পরিবেশের ক্ষতি বা হতাহত অথবা দীর্ঘস্থায়ী রোগ ব্যাধির বিস্তারের মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থার বিপত্তি ঘটে তাকে পেশাগত বিপত্তি নামে অভিহিত করা হয়। কিন্তু তা এখনো ঘটেনি। বিপদের সর্বশেষ ফল হলো দুর্ঘটনা। সম্ভাব্য বিপদসমূহ পর্যবেক্ষন, সনাক্তকরণ এবং দূরীকরণ বা কমানোর ফলে দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। দূর্ঘটনার কারণে ধারাবাহিক ক্ষতি যেমন- স্বাস্থ্য, জীবন, পরিবেশ এবং ধনসম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
ঝুঁকি (Risk)
ঝুঁকি হলো যেকোন বাস্তব অবস্থা বা ঘটনা যার কারনে কোনো ব্যক্তির বা ধনসম্পদের বা পরিবেশের ক্ষতি বা উৎপাদন ব্যবস্থা বিপত্তি বা হতাহত অথবা দীর্ঘস্থায়ী রোগ-ব্যাধিজনিত কারনে অনাকাংখিত ক্ষয়ক্ষতি। বিপদ বা ঝুঁকির সর্বশেষ ফল হলো দুর্ঘটনা। সম্ভাব্য বিপদসমূহ পর্যবেক্ষন, সনাক্তকরণ এবং দুরীকরণ বা কমানোর ফলে দুর্ঘটনা হ্ৰাস তথা ঝুঁকি এড়ানো সম্ভৰ।
ঝুঁকির ধরন এবং শ্রেণি বিন্যাস
কর্মক্ষেত্রে বিপদ বা ঝুঁকি নিম্নোলিখিত ভাবে ভাগ করা যায়-
ভৌতিক (শারীরিক) ঝুঁকি:
কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের পদার্থের কারণে যে বিপদের সৃষ্টি হয় ভাই ভৌতিক (শারীরিক) বিপদ বিভিন্ন ধরণের উপাদান যেমন- যন্ত্রপাতি, মেশিন, বিদ্যুৎ, অত্যধিক তাপ বা ঠান্ডা, আর্দ্রতা, অতি শব্দ কম্পন, চলন্ত বস্তু, কাজের অবস্থা এবং স্থান ইত্যাদি শ্রেণির ঝুঁকি এ শ্রেনির অন্তর্ভুক্ত।
রাসায়নিক ঝুঁকি
কাঁচামালসমূহ, উৎপাদিত পন্য বিক্রিয়াকারী পদার্থ ইত্যাদি কখনো কখনো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করে। যেমন- বিস্ফোরণ, বিকিরণ, বিষক্রিয়া, ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া, বিষবা, মরিচা পড়া, জ্বালাপোড়া, ক্যান্সার ইত্যাদি। রাসায়নিক বিপদের জন্য দায়ী বিভিন্ন ধরনের পদার্থগুলো হলো- এসিড, ক্ষার, ডাইস, পেইন্ট, কুয়াশা, দ্রাবক, কটন ডাস্ট, গ্যাস বা ওয়েল্ডিং ধোঁয়া, হাইড্রোজেন, ক্লোরিন, ক্রোমিয়াম, লেড বা সীসা ইত্যাদি।
জৈবিক ঝুঁকি
ক্ষুদ্র-অনুজীব এবং তাদের বিপাকীয় পদার্থের কারণে জৈবিক ঝুঁকি দেখা দেয়।
ক) নর্দমার পানিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরণের অনুজীব থাকে। সালফারযুক্ত দ্রব্য (যেমন-প্রিজ, তেল ইত্যাদি) আহার করলে তাদের শরীরে বিপাকীয় উৎপাদক হিসেবে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস নিঃসরণ ঘটে।
কিছু মাত্রার হাইড্রোজেন সালফাইড খুবই বিষাক্ত। এসবের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী কীট যেগুলো খুলা-বালিতে ভেসে বেড়ায়, তাদের কারণে শ্বাসতন্ত্র সমস্যা হয়। এটি এক ধরণের জৈনিক বিপদ।
(খ) প্রাণী এবং প্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ (চামড়া, পশম, চুল ইত্যাদি) থেকে তৈরি পণ্য জৈবিক বিপদের অন্তর্ভুক্ত। নব্যাকটেরিয়া ভাইরাস, ফাংগাস বা পরজীবি কাঁট, আক্রান্ত পশু, কোরো ব্যক্তি বা দূষিত জৈবিক ভরলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। যেমন- অ্যানথ্রাক্স (ব্যাকটেরিয়া), টিউবারকিউলোসিস (মাইকোব্যাকটেরিয়াম), এইচআইভি, হিপাটাইটিস বি (ভাইরাস), অ্যাসপারজিলাস (ফাংগি), বাইসিনোসিস (এনডোটক্সিন), ৰাজ রুম্মু (ভাইরাস), ম্যাড কাউ, সোয়াইন ফ্লু ইত্যাদি।
মনোসামাজিক ঝুঁকি
কর্মক্ষেত্রে কাজ সম্পর্কিত অথবা কাজের অবস্থানগত বিষয় য কর্মীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। ফলে মনোসামাজিক বিপদ সৃষ্টি হয়। যেমন- মানসিক বিষাদ, কাজের প্রতি একঘেয়েমী ভাব, অস্বস্তি এবং জ্বালাপোড়া ইত্যাদি।
বিপদ বা ঝুকি নিয়ন্ত্রণ
কর্মক্ষেত্রে বিপদ নিয়ন্ত্রণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। শিল্পকারখানার ডিজাইন করা থেকে শুরু করে উৎপাদনের সময় এবং কারখানা বন্ধ করা এই পর্যন্ত প্রক্রিয়া মেনে চলা হয়। এখন আমরা বিপদ নিয়ন্ত্রণের ফুল ও প্রাথমিক ধারণাগুলো বর্ণনা করছি। বর্তমান সময়ে প্রয়োজনীয় সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত ধারণা তৈরি করা হয়েছে। নিয়ে এসকল ধারনাগুলো বিবেচনা করে বিপদ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির বর্ণনা দেয়া হলো-
বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের ধাপসমূহ
কর্মক্ষেত্রে সৃষ্ট বিপদসমূহকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করে তালিকা করতে হবে। এর পরবর্তী ধাপ হলো, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির তীব্রতা অনুসারে বিপদকে র্যাংকিং করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে বিপদ সমূহকে ঝুঁকির স্তর ক্রমানুসারে র্যাংকিং করতে হবে। পরবর্তীতে বিপদের ঝুঁকি দূর করার জন্য ভিন্ন কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। যেটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিপদে রুপান্তর করবে অথবা বিপদকে দূর করবে। এটি সত্য যে, সকল বিপদ পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রস্তুতি এমনভাবে থাকা উচিত যেন সহজেই বিপদ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের (প্রাধিকার ভিত্তিতে) ক্ৰম বা পৰ্যায়
ঝুঁকি অপসারণ
যেখানে কোনো বিপদ নেই সেখানে আঘাত পাওয়া বা অসুস্থ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়-
ঝুঁকি সৃষ্টিকারী মালামাল ও যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন
বিপদ দূর করা সম্ভব না হলে কম ঝুঁকি সম্পন্ন বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করতে হবে এটি এমনভাবে করতে হবে যেন সন্তোষজনকভাবে একই ধরনের কাজ সম্পাদন করা যায়। যেমন-
শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ
ড্রাফটিং শপে নিরাপদে কাজ করতে তোমরা কোন কাজে কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিবে তা ছকে লিখ (একটি কাজের নামসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখ করা হলো) -
আরও দেখুন...